সাধারন ভাবে ল্যান বলতে এটা বলা যায় যে কিছু কম্পিউটার তারের মাধ্যমে সংযুক্ত করে একটা নেটওয়ার্ক তৈরি করা যেখানে সংযুক্ত কম্পিউতার গুলোর ভেতর তারের মাধ্যমে ডাটা আদান-প্রদান সহ বিভিন্ন ধরনের কাজ করা যেতে পারে।
ল্যানের মাধ্যমে কি ধরনের কাজ করা যেতে পারে ?
১।ফাইল শেয়ারিংঃ
এক্ষেত্রে আপনি যে অপারেটিং সিস্টেমই ব্যবহার করেন না কেনো ফাইল শেয়ারের ক্ষেত্রে নানা রকম নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যবস্থা থাকে ফলে আপনার শেয়ার কৃত ফাইল সমুহ হারিয়ে যাবার কোন ভয় নাই।
এখানে ফাইল শেয়ারিং এর মাধ্যমে যে কেউ শেয়ারকৃত ফাইল কপি করতে পারবেন নিজের কম্পিউটারে অন্য কম্পিউটার থেকে।ফলে গান,সিনেমা,ডকুমেন্ট ইত্যাদি আদান প্রদান সহজ হয়ে যায়।আপনাকে পেন ড্রাইভ কিংবা হার্ড ডিক্স খুলার কোন প্রয়োজন পড়ে না।
২।বার্তা আদান প্রদানঃ
ল্যানের মাধ্যমে এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে বার্তা আদান প্রদান করা যায় ।ফলে কাছা কাছ রুমে বা ফ্লাটে থাকলে সহজে বার্তা পাঠিয়ে যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব।
৩।ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারঃ
ল্যান ব্যবহারের আরো এক্তা প্রয়োগ হলো ল্যানের সাথে কোন আই, এস, পি, (ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার) র সার্ভারে তার দিয়ে সংযোগ করে দিলেই আই, এস, পি, র অনুমোদন সাপেক্ষে আপনি ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন।
আপাতত এই ব্যবহার গুলো বেশি গুরুত্বপূর্ন বলে মনে হচ্ছে।তবে অপারেটিং সিস্টেমের বিভিন্নতার সাপেক্ষে আর কিছু সুবিধা পাওয়া যায় কিছু সফটওয়্যার ব্যবহার করে।
কিভাবে ল্যান সেটআপ করবেন ?
প্রথমে আপনার একটা ছোট প্লান করতে হবে।যেমন কোন কম্পিউটার গুলো আপনি ল্যানের মাধ্যমে যুক্ত করতে চান তার অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হন।এখন আপনাকে তার এবং হাব(HUB) বা সুইচ(Switch) কিনতে হবে।
তার বা কেবল সাধারনত যে গুলো ব্যবহার হয় তার বাজারে নাম আলডা(২ পেয়ার বা ৪ টা তার থাকে প্লাস্টিক কোডিং এর ভেতর),ক্যাট-৫ (cat5) (৪ পেয়ার বা ৮ টা তার থাকে প্লাস্টিক কোডিং ভেতর)।এখন যদি দ্রুত গতির ল্যান বানাতে চান তাহলে ক্যাট৫ কেবল ব্যবহার করা উচিত যা দামে আলডা তারের চেয়ে অনেক বেশি।তবে যদি অনেক তার এক সাথে কেনা হয় কমে পাওয়া যাবে।পুরানো ঢাকায় কম টাকায় কেনা যায়।
হাব বা সুইচ হলো অনেক গুলো কম্পিউটার সংযোগ করার জন্য বানানো একটা ডিভাইচ।তারের এক প্রান্ত কম্পিউটারের ল্যান কার্ড ও অন্য প্রান্ত হাব বা সুইচে লাগাতে হবে।এখন হাব বা সুইচ ৫,৮,১৬ ইত্যাদি বিভিন্ন পোর্টের পাওয়া যায় যার দাম ভিন্ন ভিন্ন।আপাকে কতো গুলো কম্পিউটার সংযুক্ত করতে হবে তার উপর নির্ভর করে এটা কিনতে হবে।যেমন কাছা কাছি কম্পিউটার গুলো একটা হাবে আর অন্য জায়গায় কাছাকাছি কম্পিউটার এক হাবে সংযুক্ত করে ঐ দুইটা হাব নিজেদের ভেতর সংযুক্ত করতে হবে।
তারের দুই প্রান্তে কানেক্ট্র নামে একটা ছোট প্লাস্টিকের জিনিস যুক্ত করতে হয় যা ৩/৪ টাকা দাম নেয়।তার হাব কিংবা কম্পিউটার এর সাথে যুক্ত করতে তারের প্রতিটি প্রান্তে এটা লাগাতে হবে।এখন কানেক্ট্রর লাগানোর জন্য বিশেষ পানচ মেশিন পাওয়া যায় এবং প্লাস্টিক কোডিং এর ভেতর থাকা তার কানেক্টরে নির্দিষ্ট ক্রমে সংযুক্ত করতে হবে।আলদা বা ২ পেয়ার কেবলে ৪তা সরু সরু তার থাকে যাদের রং বিভিন্ন।কানেক্টরে মোট ৮টা ছিদ্র থাকে তাই ইচ্ছা করলে একই কানেক্টর দিয়ে আলডা কিংবা ক্যাট-৫ ব্যবহার করা যেতে পারে । বাংলাদেশের বাজারে (ঢাকাতে) যে সব কানেক্টর পাওয়া যায় তার ভেতর COB কানেক্টর ভালো কাজ করে ।
এখন কিভাবে কানেক্টর তার ঢুকাবেন।প্রথমে প্লাস্টিক কোডিং থেকে চারতা সরু তার বের করতে হবে প্লাস্টিক কোডিং কিছুটা কেটে ।এটা করার জন্য যে পানচ মেশিন পাওয়া যায় সেটা খুবই ভালো কাজে দেবে।আসলে পানচ মেশিনটা এই সম্পর্কিত কাজের জন্যই বানানো যা বাজেরে কিনতে পাওয়া যায় এবং দাম ৪০০ টাকা থেকে শুরু আমার জানামতে।
এখন একটা ব্যাপার জানানো হয়নি যে,ন্যূনতম ভাবে ল্যানের জন্য দুইটা কম্পিউটার প্রয়োজন সেক্ষেত্রে আর হাব বা সুইচ কিনতে হবে না।শুধু একটা কেবল এর দুই প্রান্তে কানেক্টর সংযুক্ত করে কম্পিউটারদ্বয়ের ল্যান কার্ডের সাথে সংযুক্ত করে দিলেই হবে।
তবে দুইয়ের অধিক কম্পিউটার সংযুক্ত করতে অবশ্যই আপনাকে হাব বা সুইচ ব্যবহার করতে হবে নতুবা কোন কম্পিউটারে একধিক ল্যান কার্ড যুক্ত করতে হবে।
এখন হাব টু কম্পিউটার তার সংযোগের জন্য তারের দুই প্রান্ত স্ট্রেইট করে কানেক্টারে যুক্তু করতে হবে।খুব কঠিন কিছু নয়।প্রতিটি তারের ভেতর সরু সরু চারটা তার থাকে যাদের কালার ভিন্ন ভিন্ন।এখন কানেক্টারের এক পাশের ছিদ্র থেকে ঐ চারটা তার ঢুকাতে হবে।প্রথম তিন্তা সরু তার পরপর তিন্তা ছিদ্রে এবং এর পর একটা ছিদ্র গ্যাপ রেখে শেষ সরু তার টা ঢুকাতে হবে।আবার ঐ তারের অপর প্রান্তের সরু তার গুলো একই ভাবে কানেক্টরে ঢুকাতে হবে।তবে যদি কম্পিউটার টূ কম্পিউটার সংযোগ হয় তাহলে দুই পাশে ক্রশ(এক পাশের সাথে অন্য পাশ উলটা ক্রমে) ক্রমে ঢুকাতে হবে আর যদি হাব টু কম্পিউটার হয় তাললে অন্য প্রান্তে একই ক্রম(দুই পাশে একই) হবে।
ক্রশঃ ১ ২ ৩ গ্যাপ ৪ এবং ৪ ৩ ২ গ্যাপ ১ ।
স্ট্রেইটঃ১ ২ ৩ গ্যাপ ৪ এবং ১ ২ ৩ গ্যাপ ৪ ।
সমজাতীয় হলে ক্রশ আর বিপরীত জাতীয় হলে স্ট্রেইট।
এখানে ১,২,৩,৪ দ্বারা রং বুঝানো হয়েছে।আশা করি এটা করা খুব কঠিন হবে না।এখন কানেক্টর পানচ মেশিনে বসিয়ে একটু চাপ দিলেই তারের সাথে কানেক্টর যুক্ট হয়ে যাবে শক্ত ভাবে।এটা হলো আলদা তারের জন্য।ক্যাট-৫ এর জন্য কালাম কম্বিনেশন নেট এ একটু সার্চ করলেই পেয়ে যাবেন।আমি এই টিউটেরিয়াল এর শেষের দিকে কিছু লিংক দিয়ে দেবো আশা করি যাতে প্রয়োজনীয় হেল্প ও ছবি পেয়ে যান।এখানে ছবি বেশি দিতে হলে অনেক ছবি দিতে হবে।
একই ভাবে যত ইচ্ছা কম্পিউটার ও হাব সংযুক্ত করতে হবে।মনে রাখতে হবে সমজাতীয় টার্মিনাল(যেমন- কম্পিউটার,হাব ইত্যাদি নিজেদের ভেতর যুক্ত করার সময় মানে হাব টু হাব অথবা পিসি টু পিসি) যুক্ত করতে তার ক্রশ করে লাগাতে হবে আর বিপরীত জাতীয় হলে(হাব টু পিসি) স্ট্রেইট(দুই পাশে একই) করে লাগাতে হবে।
ধরা যাক ল্যান বানানো ঠিক মতো করতে পেরেছেন।এখন পিসিতে কিছু কনফিগার করার দরকার আছে।ধরে নেওয়া যাচ্ছে যে একতা ল্যান কার্ড বা নেটওয়ার্ক কার্ড অবশ্যই আপনার কম্পিউটার এ লাগানো আছে ।
Friday, September 19, 2008
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment