অনেক দিন আগে এক বনের প্রায় মাঝামাঝি জায়গায় বেশ বড় এক দুর্গ ছিল। দুর্গের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে এক অদ্ভুত সুন্দর নদী। সেই দুর্গে এক রাজা বাস করতেন। রাজার ছিল একটি মাত্র ছেলে।
রাজার ছেলে মানে রাজপুত্র খুব সুন্দর গান গাইতে পারতো। সাধারণত সে দুর্গের বাইরে এমনকি বনেরও বাইরে গিয়ে গান গাইতো। তার গান বনের পশু-পাখি মুগ্ধ হয়ে শুনতো। সে কারণেই রাজপুত্র গান গাইতে শুরু করলে সব পশু-পাখি সেই গান শুনতে বনের বাইরে চলে যেতো। এ বনের পশুপাখিদের মালিক বা বনদেবতা তাদের বনের বাইরে গিয়ে গান শোনা কিছুতেই পছন্দ করতেন না। তাই সেই বনদেবতা রাজপুত্রের ওপর ভীষণ রাগান্বিত ছিলেন। কিন্তু এ জন্য কি করা যায় তিনি বুঝতে পারতেন না। অনেক দিন ধরে ভাবতে থাকলেন কি করে পশু-পাখিদের বনের বাইরে গিয়ে গান শোনাটা বন্ধ করা যায়। অবশেষে একদিন তিনি তার কাক্সিক্ষত সমাধান খুঁজে পেলেন।
এদিকে হয়েছে কি, রাজপুত্রের যথেষ্ট বয়স হওয়ায় রাজা ভাবলেন তাকে বিয়ে দেবেন। পাত্রীও ঠিক করে ফেললেন শিগগিরই। নাম সাবরিনা। রাজা সাবরিনার সঙ্গে বিয়ের কথা রাজপুত্রকে জানালেন। কিন্তু রাজপুত্র কি করবে ভেবেই পেল না। সে একবার ভাবলো, বাবাকে গিয়ে বলে সে বিয়ে করবে না। কিন্তু পরক্ষণেই ভাবলো একথায় হয়তো তার বাবা মনে কষ্ট পাবেন। তাই সে সাবরিনাকে বিয়ে করতে রাজি হলো। রাজপুত্র বিয়ের দিন দলবল নিয়ে বিয়ে করতে চললো। সে সময় বনদেবতা রাজপুত্রকে দেখতে পেলেন। অনেকদিন পর যেন তার সুযোগ এলো রাজপুত্রের ওপর রাগ ঝাড়ার। তিনি সময় নষ্ট না করে ধনুকে তীর পরিয়ে রাজপুত্রকে লক্ষ্য করে তীর ছুড়লেন। বিষাক্ত তীওে রাজপুত্র প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই মারা গেল। রাজপুত্রের মৃত্যুর খবর শুনে বনের পশু-পাখি সবাই কাঁদতে শুরু করলো। তাদের কান্না স্বর্গের দেবদূতদের কানেও পৌঁছলো। তারা রাজপুত্রকে আবারও ফেরত পাঠাবে বলে সিদ্ধান্ত নিল। কিন্তু একটা শর্ত জুড়ে দিল রাজপুত্রকে। তারা রাজপুত্রকে বললো, আমরা তোমাকে আবারও পৃথিবীতে পাঠাচ্ছি; কিন্তু তোমাকে সামান্য একটু পরিবর্তন করে তারপর পাঠাচ্ছি। প্রায় চোখের পলকে রাজপুত্র স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে চলে এলো। সে নিজের দিকে তাকিয়ে দেখলো, তার সারা শরীরে পালক জড়ানো। সে বুঝতে পারলো দেবদূতরা তার কি পরিবর্তন করে পৃথিবীতে পাঠিয়েছে।
আসলে তারা রাজপুত্রকে একটা হামিং বার্ড বানিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়েছিল।
Saturday, October 11, 2008
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment